Our website use cookies to improve and personalize your experience. Our website may also include cookies from third parties like Google, Youtube. By using the website, you consent to the use of cookies. We have updated our Privacy Policy. Please click on the button to check our Privacy Policy.

বাংলাদেশ এখন ক্রসফায়ারের মুখে: বিএনপি 

বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন দাবি করে বিএনপি বলেছে, বাংলাদেশ এখন ক্রসফায়ারের মুখে। অবৈধ ও ডামি সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র। জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে এবং রাজপথে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিএনপির নেতৃত্বে শিগগির গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে। একই সঙ্গে দলটি বলেছে, এ সরকার নিজ অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে অবৈধ অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক সুবিধা দিয়ে ভারত, চীন ও রাশিয়ার সমর্থন আদায় করেছে। বিশেষত নতজানু পররাষ্ট্রনীতি, অসম দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, নামমাত্র মূল্যে ট্রানজিট সুবিধা, পানি সমস্যার সমাধানহীনতা, গোপন আদানি চুক্তিসহ জাতীয় স্বার্থবিরোধী অজস্র প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ।

বুধবার রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এসব কথা বলেন। প্রতিবেশী দুটি দেশের সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিক হত্যার ঘটনার উল্লেখ করে দলের স্থায়ী কমিটির পক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। 

এক প্রশ্নের জবাবে গয়েশ্বর রায় বলেন, একদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে আরম্ভ করে সীমান্তে প্রতিনিয়ত গুলিবর্ষণের মাধ্যমে আমাদের বিজিবি সদস্য ও দেশের জনগণকে হত্যা করা হচ্ছে, আবার পূর্বদিক থেকে মিয়ানমারের পুলিশ ও সেখানকার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গোলাগুলিতে এ পর্যন্ত দু’জন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন। রাখাইন থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে সেনা পালিয়ে এখানে আশ্রয় গ্রহণ করছে। এটি নিয়ে শুধু বিএনপি নয়, সবাইকে ভাবতে হবে– কী ঘটতে যাচ্ছে, এর অন্তরালে কী আছে। যার প্রমাণস্বরূপ ওবায়দুল কাদের নিজেও বলেছেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের সময় ভারতই আওয়ামী লীগের পাশে দাঁড়িয়েছিল। 

একই সঙ্গে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ এ সরকারের অপশাসন থেকে মুক্তি চায় দেশের ১৮ কোটি মানুষ। বিএনপির আন্দোলনের মাধ্যমে জনবিদ্বেষী ফ্যাসিবাদের পতন ঘটবে এবং দেশে আবারও সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে। আওয়ামী লীগের দলীয় সন্ত্রাস, রাষ্ট্রযন্ত্রের একাংশের ধ্বংসযজ্ঞ এবং বিতর্কিত দেশগুলোর হস্তক্ষেপ এই সমন্বিত অপশক্তিকে উপেক্ষা করে জনগণের সমর্থনকে উৎস হিসেবে ধারণ করে বিএনপি গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় অবিচল রয়েছে।

‘৫০ লাখ নেতাকর্মী নাগরিক জীবন থেকে বঞ্চিত’

পৃথিবীতে বিএনপির মতো নির্যাতিত আর কোনো রাজনৈতিক দল আছে কিনা, সে প্রশ্ন তুলে বিএনপির পক্ষে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশে ৫০ লাখেরও বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা রাজনৈতিক মামলা করা হয়েছে? কোন অপরাধে ২ হাজার ৭শর বেশি নেতাকর্মীকে আওয়ামী লীগের অনুগত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হত্যা, প্রায় ৭০০ নিরপরাধ মানুষকে গুম করেছে? বানরের পিঠা ভাগের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ২৫ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে কেন ফ্যাসিস্ট সরকার পরিকল্পিতভাবে গ্রেপ্তার করেছে? এ সময়ে বিএনপির রাজনীতি করার অপরাধে কেন ১১ জন কর্মীকে কারাগারে হত্যা করেছে? বিএনপির ৫০ লাখ নেতাকর্মী তাদের নাগরিক জীবন থেকে বঞ্চিত– এমন দাবি করে বিএনপি বলেছে, ‘আমাদের প্রত্যেকে প্রতিদিন পুলিশি নিপীড়ন ও বিচার বিভাগের অবিচারের শিকার হচ্ছি।’ 

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি বলেছে, ৭ জানুয়ারি প্রহসনমূলক নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। ডামি প্রার্থী, ডামি দল, ডামি ভোটার ও ডামি পর্যবেক্ষকদের সমন্বয়ে ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচন মঞ্চস্থ হয়েছে। ফ্যাসিবাদের ভিত্তি হচ্ছে রাষ্ট্রযন্ত্রের একটি সুবিধাভোগী অংশ। পুলিশ, র্যা ব, বিজিবি, প্রশাসন ও আদালতের কিছু সরকারি কর্মকর্তা রাজনৈতিক বিবেচনায় পদোন্নতি ও সুযোগ-সুবিধা পেয়ে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারে পরিণত হয়েছেন। তারাই আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনে পরিণত করেছেন বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জনপ্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সাংবিধানিক ও বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপিসহ গণতান্ত্রিক দলগুলোর নির্বাচন বর্জন সঠিক ও যৌক্তিক ছিল।

‘সব প্রকল্প পৃথিবীর সবচেয়ে খরচবহুল’ 

৩৬ হাজার কোটি টাকার মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যয়বহুল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র! পায়রায় ১ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকার যে সমুদ্রবন্দর হচ্ছে, এটি এযাবৎকালে সর্বোচ্চ ব্যয়বহুল সমুদ্রবন্দর। রূপপুরের ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকায় যে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, এটিও পৃথিবীর সর্বোচ্চ খরচের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। একইভাবে মেট্রোরেল প্রজেক্ট ও বিমানবন্দর-গাজীপুর র্যা পিড বাস ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পটি পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিআরটি লাইন। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন, হারুন উর রশীদ প্রমুখ।

Related Posts

  • ‘শিবির করি কি না জিজ্ঞেস করেই থাপ্পড় দেয় আমাকে’

  • রাতের ভোটের আওয়ামী লীগ সরকার

  • হাসিনার হাইব্রিড শাসন: স্বৈরাচার, গণতন্ত্রের মুখোশ এবং উন্নয়নের মূলা

  • নির্বাচনের নামে ভেল্কিবাজি