Our website use cookies to improve and personalize your experience. Our website may also include cookies from third parties like Google, Youtube. By using the website, you consent to the use of cookies. We have updated our Privacy Policy. Please click on the button to check our Privacy Policy.

শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগ নেতার হুমকি, ‘তোকে মেরে শিবির বলে চালিয়ে দেব’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের এক ছাত্রকে হলের একটি কক্ষে আটকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। নির্যাতনের পাশাপাশি ওই শিক্ষার্থীকে শিবির আখ্যা দিয়ে হত্যার হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও হল প্রাধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম কৃষ্ণ রায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সোলাইমানসহ ছাত্রলীগের সাত-আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।

রাতে তিনি ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার হন। তিনি আজ সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ নেতা কর্তৃক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং শিবির ট্যাগ দিয়ে মেরে ফেলার হুমকির বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছেন।

অভিযোগে কৃষ্ণ রায় উল্লেখ করেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রদীপ কুমার পাণ্ডের সুপারিশে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ৩৮৩ নম্বর কক্ষে আছি। গত রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলামের সাত থেকে আটজন অনুসারী আমার রুমে এসে আমাকে বের হয়ে যেতে হুমকি দেয়। আমি রাজি না হলে আমার বিছানা ফেলে দিয়ে আরেকজনকে তুলে দেয় তারা। এ সময় সোলাইমান নামে এক ছাত্রলীগ নেতা আমাকে মারধর করেন। এরপর আমাকে সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলামের রুমে নিয়ে মারধর ও মানসিক নির্যাতন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম বলেন, “তোকে মেরে শিবির বলে চালিয়ে দেব।” কিন্তু আমি হিন্দু জানার পর বলেন, “এখন তো তোকে মেরে ফেললেও কেউ কিছু করতে পারবে না।”’

কৃষ্ণ রায় প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বাড়ি নীলফামারী। তাঁর বাবা নেই। দুই বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছোট। টানাটানির সংসারে মেসে থেকে তাঁর পড়াশোনা চালানো কঠিন ছিল। এ কারণে তিনি জনসংযোগ দাপ্তরের প্রশাসকের সুপারিশে হল প্রাধ্যক্ষের অনুমতি নিয়ে হলে উঠেছেন। হলে ওঠার জন্য আবেদন করেছেন।

কৃষ্ণ রায় আরও বলেন, ‘ওই দিন মনে হয়েছিল, আমি কেন হলে উঠলাম। ছাত্রলীগ এমনভাবে কথা বলছিল যেন আমরা কিছুই না এই জায়গায়। মনে হয় মেরে ফেলবে। কিছুই করার নেই। এটা যেন আর কারও সঙ্গে না হয়, তাই বিচার দাবি করছি। আমার সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে, তার জন্য বিচার চাই।’

এ বিষয়ে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলাম বলেন, তিনি ওই দিন ঘটনাস্থলে ছিলেন না। তবে তাঁদের কয়েকজন সেখানে গিয়েছিলেন তাঁদের আবাসিক একজনকে তুলে দিতে। সেখানে কথা-কাটাকাটি হয়ে থাকতে পারে। নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটেনি। আর বিষয়টি ইতিমধ্যে সমাধান হয়ে গেছে। ওই শিক্ষার্থী ওই কক্ষেই আছেন।

ডেকে নিয়ে তাঁর কক্ষে ওই ছাত্রকে নির্যাতন ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগের অস্বীকার করে নাঈম বলেন, ‘ওই ছাত্রকে আমার কক্ষে আনা হয়নি। আর একজন হিন্দুধর্মের ছেলেকে কীভাবে শিবির ট্যাগ দিই। আমি এগুলো করিনি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি হলে নেই। তবে এটি হল প্রশাসন থেকে নেওয়া হয়েছে। তিনি ঘটনাটি আগেই জেনেছেন। ওই ছাত্রের অর্থনৈতিক অবস্থা নাজুক। এ কারণে তিনিই থাকতে অনুমতি দিয়েছিলেন। তাঁকে নির্যাতন করার অধিকার কারও নেই। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।
এ বিষয়ে প্রক্টর আসাবুল হক বলেন, একটি অভিযোগ প্রক্টর দপ্তরে এসেছে সন্ধ্যার দিকে। তিনি রাতে গিয়ে অভিযোগটি দেখবেন।

Related Posts