বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, “মানুষের আত্মচিৎকার আর হাহাকারে ভারী চারদিক। বঞ্চিত ও নির্যাতিত মানুষ আজ মুক্তির প্রহর গুণছে। দেশের সর্বত্র করুণ পরিস্থিতি বিরাজমান। দেশে ইসলামী আন্দোলন চরম ক্রান্তিকাল অতিবাহিত করছে। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের ওপর জুলুম-নিপীড়ন চলছে। আজ ঘরে বাইরে কোথাও কেউ নিরাপদ নয়। নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-শিশু কেউ সুরক্ষিত নয়। এভাবে কোনো জাতি চলতে পারে না। মুক্তির জন্য পরিবর্তন দরকার।”
চট্টগ্রাম মহানগরী আয়োজিত রুকন প্রার্থী ও অগ্রসরকর্মী শিক্ষা শিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর নায়েবে আমীর ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ’র সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় শিক্ষা শিবিরে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও মহানগরী নায়েবে আমীর মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ প্রমূখ।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “বর্তমানে এদেশ থেকে ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধ ধ্বংস করতে নানাবিধ ষড়যন্ত্র চলছে। আজকে দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। এমতাবস্থায় এদেশের মানুষকে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদী শক্তির দুঃশাসন থেকে মুক্ত করতে সকলকে অগ্রসৈনিকের ভূমিকা পালন করতে হবে।” তিনি দেশ ও জাতির প্রয়োজনে যেকোনো ধরনের ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার জন্য আহ্বান জানান।
মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, “পরকালীন মুক্তিই মুমিন জীবনের একমাত্র সফলতা। সে লক্ষ্যে আমাদের সকলকে ইসলামের রঙে রাঙ্গানো অতীতকে ধারণ করে বৃহত্তর অঙ্গনে দ্বীন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। আগামী জীবনকে আরও সুন্দর ও গতিশীল পরিবার ও সমাজ পরিচালনার লক্ষ্যে বৃহত্তর আন্দোলনে বাইয়াতের কর্মী হিসেবে নিজেকে তৈরি করার বিকল্প নেই। বাইয়াত মানুষের জীবনকে সুন্দর, জ্ঞানগত পরিপূর্ণতা, মানুষের কল্যাণকামী ও উন্নত আমলের ক্ষেত্রে অন্যতম ভূমিকা পালন করে। রাসূল (সা.) এর কাছ থেকে সাহাবীগণ বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে বাইয়াত নিয়েছেন “
মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, “আল্লাহর প্রতিটি বিধি-বিধান যথাযথভাবে পালনের মাধ্যমে আমাদেরকে আল্লাহর হক আদায় করতে হবে। তিনি যা নিষেধ করেছেন তা ছাড়তে হবে এবং যা করার জন্য বলেছেন, তা সঠিকভাবে পালন করতে হবে। আদালতে-আখিরাতে জবাবদিহিতার হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্যই আমাদেরকে মহান আল্লাহর হক যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। বান্দার হক বিনষ্টকারীগণ ক্বিয়ামতের দিন সর্বাধিক অসহায় ও নিঃস্ব হিসাবে গণ্য হবে। পিতা-মাতার সাথে আমাদের উত্তম ব্যবহার করতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “আমাদেরকে ব্যাপকভাবে সালামের প্রচলন ঘটাতে হবে। প্রতিবেশীর হক আদায় করতে হবে এবং তাদের সাথে সদাচরণ করতে হবে। আমাদেরকে ঋণমুক্ত জীবন-যাপন করতে হবে। ইয়াতিমের হক আদায় করতে হবে। কারণ কাল কিয়ামতের দিন এসব ব্যাপারে আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে।”